বর্তমানে বাচ্চা কে বুকের দুধ খাওয়ানর পরিবর্তে ফর্মুলা মিল্ক বা কৌটা দুধের উপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছেন। এক দিন বয়সী বাচ্চা থেকে শুরু করে ছয় বছর পর্যন্ত। অনেকেই দেখা যায় বুকের দুধ আসতে দেরি হলেই কৌটার ফর্মুলা দুধের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এতে নবজাতকের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। শরীরে বিভিন্ন ধরণের ভাইরাস আক্রমণ করে। শুধু তাই না, এই কৌটার ফর্মুলা দুধের আরও অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ সর্বদা ফর্মুলা মিল্ক খেতে নিরুতসাহিত করেন।
সুষম খাবারের অভাবঃ মায়ের বুকের দুধকে বলা হয় নবজাতকের জন্য সুষম খাবার। কেননা এতে রয়েছে শর্করা, আমিষ, স্নেহ, ভিটামিন, মিনারেল এর সঠিক সংমিশ্রণ। কিন্তু ফর্মুলা মিল্কে এই অনুপাত সঠিক ভাবে থাকে না যার কারণে বাচ্চা পুষ্টিহীনতায় ভোগে। এছাড়া ফর্মুলা মিল্ক একজন নবজাতকের মস্তিষ্ক বৃদ্ধিতে বিঘ্ন ঘটায়। এতে বাচ্চা বড় হয়ে বিভিন্ন সমস্যায় ভোগে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ যেহেতু ফর্মুলা দুধ সুষম খাবার নয় তাই এই দুধ শিশুকে খাওয়ালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এতে নবজাতক নানা রকম ভাইরাসজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়।
বাচ্চার পেটে গ্যাস তৈরিঃ ফর্মুলা দুধে সোডিয়াম ও অস্মোলারিটিও বেশি থাকে। এতে শিশুর পেটে গ্যাস্ট্রিক তৈরি হয় এবং বমি বমি ভাবসহ বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি করে। গ্যাস পেটে জমা হলে তা শিশুর পেটে ব্যথা সৃষ্টি করে। আর সমস্যাটা যেহেতু বুঝাতে পারে না, তাই সেসময় অনবরত কান্না করে শিশু।
অ্যালার্জি জনিত রোগঃ ফর্মুলা মিল্ক প্রাপ্ত বাচ্চাদের স্থূলতা, নিওনেটাল টেটানি এবং বিভিন্ন অ্যালার্জি জনিত রোগ এ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৩ গুন বৃদ্ধি পায়।
আত্মিক বন্ধন তৈরিঃ মা যখন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান তখন মা ও শিশুর মাঝে একধরনের আত্মিক বন্ধন তৈরি হয়। কিন্তু ফর্মুলা মিল্কে সেই সম্ভাবনা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
মায়ের সু-স্বাস্থ্যঃ বাচ্চাকে ফর্মুলা মিল্ক খাওয়ালে যে শুধু নবজাতকের ক্ষতি হয় তা নয়, এর সাথে সাথে প্রচণ্ড ক্ষতি হয় মার নিজেরও। প্রসব পরবর্তী রক্তপাত কমানো, জরায়ুর পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়া, ব্রেস্ট, ওভারিয়ান ক্যান্সার, অস্টিওপোরোসিস হওয়ার ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে রয়েছে স্তন পানের এক অনবদ্য অবদান। যেটা থেকে মা সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হোন বাচ্চাকে ফর্মুলা মিল্ক খাওয়ানোর কারণে।
তাই নবজাতককে সুস্থ্য রাখতে মায়ের দুধের কোন বিকল্প নেই। একারনে প্রথম ছয় মাস একজন শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ পান করাতে হবে।